জাহিদ ফারুকের প্রার্থীতা বাতিলে সাদিক আবদুল্লাহর আপিল


বরিশালটুডে ডেস্ক: এবার বরিশাল-৫ (সদর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে নির্বাচন কমিশনে পাল্টা অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তাঁর বিরুদ্ধে স্ত্রী-সন্তানের নামে বিদেশে বাড়ি এবং আমেরিকায় টাকা পাঠানোর অভিযোগ করেন তিনি।

এসব অভিযোগে ৯ ডিসেম্বর শনিবার আপিলের শেষ দিন নির্বাচন কমিশনে স্বতন্ত্র প্রার্থী বরিশাল সিটির সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে আপিল করেন ব্যারিস্টার ইফতাবুল কামাল।

বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম জাহাঙ্গীর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম প্রতিদ্ব›িদ্বতাপূর্ণ একটি নির্বাচন। অথচ আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আমাদের প্রার্থীকে নিয়ে ষড়যন্ত্র (খোঁজাখুচি) করছে। আমরা বাধ্য হয়েছি তাঁর বিরুদ্ধে আপিল করতে।

তিনি বলেন, ‘নিজের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। অথচ তিনি আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে অভিযোগসহ নানা ষড়যন্ত্র করছে। যাদের পায়ের নিচে মাটি নেই, তারাই এগুলো করে। এখন আইন অনুযায়ী যা হওয়ার তাই হবে।

এদিকে, ‘নির্বাচন কমিশনে স্বতন্ত্র প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অভিযোগ করেছেন, ‘আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীম তাঁর নির্বাচনী হলফনামায় পোষ্য সন্তানের নামে থাকা সম্পদের বিবরণ এবং স্ত্রীর নামে আমেরিকায় বাড়ি থাকার তথ্য গোপন করেছেন।

এমনকি জাহিদ ফারুক শামীম নিজেই এনআরবিসি ব্যাংকের মাধ্যমে আমেরিকায় টাকা পাঠান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। যার তথ্য-প্রমাণসহ শনিবার কমিশনে আপিল করা হয়।

অভিযোগ প্রসঙ্গে বক্তব্য জানতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমের ব্যক্তিগত মুঠোফোন নম্বরে কল করা হলেও নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

তবে তাঁর সমর্থক বরিশাল জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি লস্কর নুরুল হক বলেন, ‘কমিশনে আপিল হয়েছে কি-না আমার জানা নেই। তবে কমিশনে এমন আপিলের আইনত সুযোগ নেই দাবি করে তিনি বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁর হলফনামায় আমেরিকায় স্ত্রীর নামে থাকা বাড়ির তথ্য গোপন করেছেন। এ বিষয়ে আমরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছিলাম। কিন্তু রিটার্নিং অফিসার আমাদের অভিযোগ রিজেক্ট করেছেন। এ কারণে আমরা নির্বাচন কমিশন ট্রাইব্যুনালে আপিল করেছি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকলে সেটা আগে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে করার কথা ছিল। সেটা না করে সরাসরি কমিশনে কীভাবে আপিল করে, বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।

উল্লেখ্য, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সদ্য সাবেক সিটি মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। তবে এ আসনে মনোনয়ন দেয়া হয় বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীমকে।

বরিশাল সিটি এবং সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বরিশাল সদর আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নামেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইকালে সাদিক আবদুল্লাহর বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে স্ত্রীর নামে আমেরিকায় বাড়ি থাকার তথ্য গোপন এবং সাদিক আবদুল্লাহ আমেরিকার নাগরিক বলে অভিযোগ করেন।

কিন্তু তথ্য-প্রমাণ না থাকায় সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম। রিটার্নিং কর্মকর্তার এ আদেশের বিরুদ্ধে গত ৬ ডিসেম্বর পুনরায় কমিশনে আপিল করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহিদ ফারুক শামীমের সমর্থক অ্যাডভোকেট কেবিএস আহমেদ কবির।