বরিশালটুডে ডেস্ক: পিরোজপুরের ভান্ডারিয়ায় চিকিৎসকের অনুপস্থিতিতে নার্স ও আয়াদের হাতে ডেলিভারির সময় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (২১ আগস্ট) উপজেলার ‘লাইফ কেয়ার হসপিটাল’ নামে একটি বেসরকারি হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটেছে।
নবজাতকের মৃত্যু হওয়ার পরে হাসপাতালটি ঘেরাও করেন তার স্বজনরা। ভুক্তভোগীরা জানান, ওই দিন সকালে উপজেলার ইকড়ি ইউনিয়নের আতরখালী এলাকার মো. জোবায়ের মৃধার স্ত্রী হালিমা বেগমের প্রসব ব্যথা উঠলে তাকে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়।
সেখানে কর্তব্যরত নার্সরা তাকে জরুরি সেবা দেন। কিন্তু ওই সময় ক্লিনিকে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। পরে ক্লিনিকের নার্স ও আয়ারা ডেলিভারি দায়িত্ব নেন। ডাক্তার ছাড়াই তারা নবজাতককে টেনে-হিঁচড়ে বের করায় সময় শিশুটির ঘাড় ভেঙে ফেলেন। এতে ওই শিশুটির মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ স্বজনদের।
এ খবর প্রসূতির স্বজনদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে তারা ক্লিনিক ঘেরাও করেন। পরে ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ গিয়ে ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর ক্লিনিকের কর্মচারীদের আটক করে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
নিহত নবজাতকের মা হালিমা বেগম বলেন, প্রসব ব্যথা উঠলে প্রথমে ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যাই। সেখান থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্স এই ক্লিনিকে ভর্তি হতে বলেন। তখন স্বজনরা আমাকে লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত নার্স ও আয়ারা ডেলিভারির ব্যবস্থা করবেন বলে জানান। কিন্তু ক্লিনিকে যে চিকিৎসক নেই সেটি তারা আমাদের জানাননি।
পরে নার্সরাই ডেলিভারি করান। ডেলিভারির পরে জানতে পারি আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। অথচ ডেলিভারির আধা ঘণ্টা আগে করা আলট্রাসনোগ্রামে নবজাতক সুস্থ বলে জানতে পারি। তাদের অবহেলা ও অজ্ঞতার কারণে আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে গেলে মালিক পক্ষ, নার্স ও আয়াদের ক্লিনিকে পাওয়া যায়নি।
ভান্ডারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসিকুজ্জামান জানান, ঘটনা জানার পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্লিনিকের তিনজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভান্ডারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকতা ডা. বর্নালী দেবনাথ বলেন, আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই ক্লিনিকের কর্তব্যরত কোনো চিকিৎসককে পাইনি। জানতে পারি তিনজন নার্স এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।