প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীর অনুষ্ঠানে হামলা, আহত ৭

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারীর অনুষ্ঠানে হামলা, আহত ৭

বরিশালটুডে ডেস্ক: কুমিল্লার লাকসামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনে আয়োজিত আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুল মান্নানের লোকজনের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসময় তার বাড়ি ও ব্যক্তিগত অফিস ভাঙচুরও করা হয়েছে। এ ঘটনায় আব্দুল মান্নানের সমর্থিত আওয়ামী লীগ কর্মী মো. ফারুক, রাশেদ, শাহজাহান, মনির হোসেনসহ অন্তত সাত-আটজন গুরুতর আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে লাকসাম পৌরসভার আব্দুল মান্নানের বাড়ির পাশে গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসা মাঠ ও পাশের রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৭তম জন্মদিন উপলক্ষে এলাকাবাসীর উদ্যোগে লাকসামের গাজীমুড়া কামিল মাদ্রাসা মাঠে বিকেল তিনটায় আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল মান্নান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। বিকেল সোয়া তিনটার দিকে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন। সেখানে অনুষ্ঠানের অনুমতি নেয়া হয়নি বলে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে গেট বন্ধ করে রাখার নির্দেশ দেন। এই নিয়ে আয়োজকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা ও সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার পাশের একাধিক বাসিন্দা ইত্তেফাকের এই প্রতিনিধিকে জানান, ঘটনার সময় গামছা দিয়ে মুখ বেঁধে ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে কয়েকজন যুবক কুপিয়ে জখম করেছে। এসময় অনুষ্ঠানে আসা লোকজন অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে আত্মরক্ষার্থে দৌঁড়ে চলে যায়। এ ঘটনায় আশপাশের বাসিন্দাদের মাঠে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী আব্দুল মান্নানের লোকজন মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠান করতে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেয়নি। তাদেরকে অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিলে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে রুবেলসহ আমাদের দুই-তিনজন কর্মী আহত হয়েছে। ঘটনার সময় আব্দুল মান্নান তার পকেট থেকে পিস্তল বের করে গুলি করতে চেয়েছিল। এতে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।

তবে আব্দুল মান্নান জানান, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলমের উপস্থিতিতে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতা শিহাব, রাসেল ও স্বাধীনের নেতৃত্বে তাদের সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে অনুষ্ঠানে আসা লোকজনের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে সাত-আটজনকে গুরুতর আহত করা হয়। আহতদের মধ্যে কয়েকজনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মাথায় ও হাতে-পায়ে কোপের আঘাতে গুরুতর আহত মনির হোসেনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা ঘটনাস্থলের অদূরে তার বাড়িতে ও দৌলতগঞ্জ বাজারে তার ব্যক্তিগত অফিসে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে এবং অফিস ও অনুষ্ঠানস্থলের চেয়ার-টেবিল নিয়ে যায়। তিনি ঘটনার সময় পকেটে লাইসেন্স করা পিস্তল থাকলেও তা বের করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

রাতে লাকসাম থানার ওসি আবদুল্লাহ আল-মাহফুজ বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে আব্দুল মান্নান তার ব্যক্তিগত অফিসে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করেন। বিকেলে মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠানের বিষয়টি আমাদের জানা ছিল না। তবে খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। এ ঘটনায় মনির হোসেন নামে একজন আহত হয়েছেন।