বরিশাল জেলায় ডেঙ্গুতে আরও চারজনের মৃত্যু, নতুন আক্রান্ত সংখ্যা ৩৬৬

বরিশালটিুডে ডেস্ক: গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ৩৬৬ জন ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ নিয়ে বিভাগে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১১৭ জনে।

গত জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৭ হাজার ১৮ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় যাঁরা মারা গেছেন, তাঁদের মধ্যে তিনজন মারা গেছেন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডেঙ্গু ওয়ার্ডে। তাঁরা হলেন পটুয়াখালীর সৈকত (২৯), বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রিনা আক্তার (৩৮), বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিতাই চন্দ্র (৭৫)। বাকি একজনের মৃত্যু হয়েছে পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তাঁর নাম মো. ইয়াসিন (৭৫)।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলছে, গত জুলাই থেকে বরিশাল বিভাগে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী এবং মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। আগস্টে তা আরও বাড়ে। সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়ংকর রূপ নেয় এবং চলতি মাসেও তা অব্যাহত রয়েছে। চলতি অক্টোবরের ৮ দিনে ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৫ জন, আর আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৫৪০ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে দুজনের বেশি রোগীর মৃত্যু হয়। আর প্রতিদিন আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন গড়ে ৩৩২ রোগী। বিভাগে ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া ১১৭ জনের মধ্যে সেপ্টেম্বরেই মারা যান ৬৪ জন। ওই মাসে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হন ৯ হাজার ৯১৫ জন। ডেঙ্গুতে মারা যাওয়া রোগীদের মধ্যে ৯৫ শতাংশই গ্রামের রোগী, যাঁরা স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছিলেন। মারা যাওয়া রোগীদের প্রায় ৯১ শতাংশের বয়স ৪০ থেকে ৭০ বছরের ওপর। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে নারীদের সংখ্যা প্রায় অর্ধেক।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর লাগাম টানা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এর আগে এই বিভাগে কখনো এত রোগীর মৃত্যু ও আক্রান্তের ঘটনা ঘটেনি। এবার এত রোগী হাসপাতালে আসছে যে স্থান সংকুলান হচ্ছে না। ফলে চিকিৎসকদেরও রোগীদের সামলাতে হিমশিম অবস্থা।

তিনি আরও বলেন, এবার ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রত্যন্ত গ্রামে ছড়িয়ে পড়ায় এটা নিয়ন্ত্রণ করা দুসাধ্য হয়ে গেছে। আগে কখনো এমন হয়নি। আগে বড় শহরে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বেশি ছিল। এবার পরিস্থিতি পুরোপুরি উল্টো। চলতি বছর বৃষ্টি বিলম্বিত হওয়ায় ডেঙ্গুর প্রকোপও বিলম্বিত হচ্ছে। এ ছাড়া গ্রামের রোগীদের ডেঙ্গু শনাক্ত হওয়া ও চিকিৎসা শুরু করতে দেরি হওয়ায় মৃত্যু বাড়ছে।