বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন এর কর্মবিরতি পালন


স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন বরিশাল জেলা শাখা’র ব্যানারে কর্মবিরতি করেছে জেলা দায়রা জজ আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

আজ সোমবার (৫ মে) সকাল সাড়ে ১০ টায় বরিশাল জেলা দায়রা জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে এ কর্মবিরতি পালন করা হয়।

এসময় বরিশাল জেলা বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন, সভাপতি এসএম হেদায়েত উল্লাহ বি জাকির বলেন, আমরা বিচার বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর মাসদার হোসেন মামলার রায়ের প্রেক্ষিতে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ কে ভাগ করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বিচার বিভাগের জন্য স্বাধীন সচিবালয় না হওয়ায় বিচার বিভাগ পৃথকিকরণের উদ্দেশ্যে পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। বিচার বিভাগে মাননীয় বিচারক ও সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসম্পাদনের মধ্য দিয়েই বিচারিক কার্য সুসম্পন্ন হয়। বিচার কার্যে সরাসরি নিয়োজিত আদালতের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে সরকারের নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাধীনভাবে বিচারকার্য সম্পাদন করা সম্ভব নয়। বিচার বিভাগ পৃথক হওয়ার পর শুধুমাত্র মাননীয় বিচারকগণের জন্য ৬টি গ্রেড রেখে পৃথক পে-স্কেলসহ নিয়োগ বিধিমালা প্রণয়ন করা হলেও সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে এই পে-স্কেলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। বিচারকগণের জন্য বিচারিক ভাতা, চৌকি ভাতা, দেওয়ানি আদালতের অবকাশকালীন ছুটি ফৌজদারি আদালতে দায়িত্ব পালনের জন্য এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অবকাশ ভাতা প্রদানের বিধান থাকলেও বিচার সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে অনুরূপ কোন ভাতাও প্রদান করা হয়না। এক কথায় বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের পর মাননীয় বিচারকগণের জন্য যে সকল সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়েছে, বিপরীতে বঞ্চিত করা হয়েছে সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে।

বরিশাল জেলা বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ কামরুল হাসান বলেন, জেলা ও দায়রা জজ (১ম গ্রেড) জেলাতে সর্বোচ্চ পদমর্যাদার বিচারিক কর্মকর্তা হলেও একমাত্র প্রশাসনিক কর্মকর্তা (১০ গ্রেড) ব্যতীত অধীনস্ত সকলেই ১৩তম থেকে ২০তম গ্রেডের কর্মচারী। অধস্তন আদালতে মাননীয় বিচারক ব্যতীত আর কোনো প্রথম শ্রেণীর পদমর্যাদার পদ নেই। দ্বিতীয় শ্রেণীর পদও খুবই নগন্য। অন্যান্য দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে পদোন্নতির জন্য যেখানে ৫ বছর থেকে ৭ বছরের চাকুরীর অভিজ্ঞতায় পদোন্নতির সুযোগ আছে, সেখানে অধস্তন আদালতের কর্মচারীগণকে এই পদের জন্য ২০ থেকে ২২ বছর অপেক্ষা করতে হয়। অন্যান্য দপ্তরে পদ-পদবি আধুনিকায়নসহ গ্রেড উন্নয়ন হয়, কিন্তু অধস্তন আদালতের কর্মচারীগণের কোন উন্নতি নেই, পদোন্নতির যেটুকু ব্যবস্থা আছে, তার চেয়ে ব্লক পদের সংখ্যাই বেশী। পদোন্নতির সুযোগ সীমিত হওয়ায় অনেক কর্মচারী পদোন্নতি ছাড়াই আক্ষেপ ও হতাশা নিয়ে একই পদে ৩৮ থেকে ৪০ বছর চাকুরী করেও পদোন্নতি বঞ্চিত থেকে অবসরে যাচ্ছেন। যা বর্তমান আধুনিক বিশ্বায়নের যুগে কোনভাবেই কাম্য নয়। এসকল বৈষম্য নিরসন করতে হবে।

এসময় দাবিসমূহ উপস্থাপন করে বলেন, বিচার বিভাগের জন্য সুপ্রীম কোর্টের অধীন পৃথক সচিবালয় করে আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়কদের বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আলোকে বেতন ভাতা প্রদান করতে হবে। আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগে বিদ্যমান ব্লক পদ বিলুপ্ত করে সৃজনপূর্বক যোগ্যতা ও জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ রেখে স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়ন করতে হবে।