বরিশালটুডে ডেস্ক: দক্ষিণাঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি বজ্রমোহন (বিএম) কলেজ ছাত্রাবাস গুলোর বেহাল দশা। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, তবুও কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কলেজ প্রশাসন। শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টার দিকে বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের মহাত্মা অশ্বিনী কুমার ছাত্রাবাস ( ডিগ্রি হলের) এ-ব্লকের ২০৮ নাম্বার রুমে ছাত্ররা ঘুম অবস্থায় পলেস্তারা খসে পরে। ওই রুমের ছাত্ররা মশারী টাঙিয়ে ঘুমানোর ফলে পলেস্তারা গুলো সরাসরি তাদের উপর পরেনি। এতে আহত হয় চারজন শিক্ষার্থী।
আহতরা হলেন, গণিত বিভাগের রেজাউল ইসলাম, মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মমিনুল ইসলাম, ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমন ও মাসুম।
কান্না জড়িত কন্ঠে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মমিনুল ইসলাম বলেন, রাত তখন সাড়ে ৩ টা, আমরা সবাই ঘুমানো ছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। টের পেলাম পুরো ভবনটি যেনো কেপে উঠলো। রুমের লাইট জ্বালিয়ে দেখি রুমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। মশারি টানিয়ে ঘুমানোর ফলে খসে পড়া পলেস্তারের কিছু অংশ মশারির উপর পড়ে। তবে মশারি টানানো না থাকলে পলেস্তরা আমাদের উপর সরাসরি পরে জীবনও চলে যেতে পারতো। একমাত্র আল্লহই রক্ষা করেছেন।
আহত রেজাউল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই ঘুমানো ছিলাম এসময় হঠাৎ করেই ছাঁদের ঢালাইয়ের কয়েকটি বড় বড় অংশ ধ্বসে পড়ে ।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে- কলেজের ভেতরে দক্ষিন পাশে বহু বছর আগে নির্মিত মহাত্মা অশ্বিনী কুমার হল (ডিগ্রী হোস্টেল)। যুগের পর যুগ বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করে আসছে। জনপ্রতি বাৎসরিক সাড়ে ৪ হাজার টাকা ভাড়ায় প্রতি রুমে ৪ জন শিক্ষার্থী থাকেন এই ছাত্রাবাসে। বর্তমানে এখানে রয়েছেন প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী।
সেখানকার শিক্ষার্থীদের আতঙ্কের সাথে দুর্ভোগও শেষ নেই। রুমের স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ। ছাত্রাবাস ভবনের অনেক জায়গায় ছাদের পলেস্তারা খসে গেছে, বৃষ্টির সময় অনেক জায়গা থেকে পানিও পরে, রুমের ভেতরে নিয়মিতই খসে পড়ে দেয়ালের পলেস্তার, ভবনের গোসলখানা, টয়লেটের অবস্থাও অশোচনীয়।
ছাত্রাবাসে বসবাসরত কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, দূরদূরান্ত থেকে বিএম কলেজে পড়তে এসেছেন তারা। বাইরে থাকতে গেলে অনেক খরচ, তাই খরচ কমাতে কষ্ট করে বিএম কলেজের এই হোস্টেলেই থাকছেন। কিন্তু বর্তমানে ছাত্রাবাসের অবস্থা এতটাই খারাপ যে সব সময়ই তাদের আতঙ্কে থাকতে হয়।
তাদের ভাষ্য, কলেজের ভেতরে অনেক দৃষ্টিনন্দন ভবন থাকলেও শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ভবনের সংস্কার এবং নতুন ভবন নির্মাণে কেন কর্তৃপক্ষের অনীহা, সেটা তাদের জানা নেই। তারা দ্রুত শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ভবন নির্মাণ করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে হলের ছাত্ররা কয়েকবার কলেজ প্রশাসনের শরণাপন্ন হলেও তাদের আশ্বাস দেয়া ছাড়া দেয়া হয়নি কোনো সমাধান।
এবিষয়ে বিএম কলেজ অধ্যক্ষ গোলাম কিবরিয়া বলেন, গতরাতের ঘটনা শুনে ডিগ্রি হলের ঐ রুমটি আমরা পরিদর্শন করেছি। শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগকে অবহিত করেছি। তারা শীগ্রই হলটি দেখতে আসবেন ও যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, এ ব্লকের এই হলটি অনেক পুরোনো তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা অচিরেই সব ছাত্রাবাস গুলো ঠিকঠাক করার চেষ্টা করছি।