মহাসমাবেশ ঠেকাতে পুলিশ সারাদেশে নেতাকর্মীদের আটক করছে: রিজভী


মহাসমাবেশ ঠেকাতে পুলিশ সারাদেশে নেতাকর্মীদের আটক করছে: রিজভী

আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে। আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নেতা-কর্মীরা সরকারের সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সফল করবেন। কারণ সময় এসেছে রাজপথে ফায়সালা করার।

বরিশালটুডে অনলাইন ডেক্স: আগামীকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ ঠেকাতে সারাদেশ থেকে পুলিশ নেতা-কর্মীদের আটক করছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

আজ বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের মহাসমাবেশ হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। মহাসমাবেশে জনতার ঢল নামবে। আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি। নেতা-কর্মীরা সরকারের সকল রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে মহাসমাবেশে যোগ দিয়ে সফল করবেন। কারণ সময় এসেছে রাজপথে ফায়সালা করার।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী বলেন, মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে নির্দলীয়, নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভোটাধিকার আদায়ে রাজপথ দখলের জন্য দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। তিনি সারা দেশ থেকে দলে দলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ২৭ জুলাই ঢাকার মহাসমাবেশে যোগ দেওয়ার জন্য দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে গণতন্ত্রকামী মানুষকে যে আহবান জানিয়েছেন, তাতে সাড়া দেওয়ার জন্য আমি দলের পক্ষ থেকে পুনরায় উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। কারণ সময় এসেছে রাজপথে ফায়সালা করার। সময় এসেছে আবারও বিনা ভোটে ক্ষমতায় থাকার কর্তৃত্ববাদী নব্য বাকশালী মাস্টারপ্ল্যান চূর্ণবিচূর্ণ করে অধিকার প্রতিষ্ঠার। ১৫ বছর আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনে পিষ্ট সব মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। এ জন্য সকলকে আন্দোলন সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।

তারেক রহমান মহাসমাবেশ সফল করার আহবান জানিয়েছেন উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ধর্ম, বর্ণ, নির্বিশেষে দেশের গণতন্ত্রকামী সকল শ্রেণি-পেশার জনগণ যদি ঐক্যবদ্ধ হয়ে সমাবেশে যোগ দেই তাহলে সরকার জনগণের দাবি মানতে বাধ্য হবে। জনগণের এখন একটাই দাবি, দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রেখে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। অবৈধ সরকার, অবৈধ সংসদ আর বর্তমানের মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন রেখে কখনোই নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে না, হতে পারে না। জনগণ হতে দেবে না।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, তারেক রহমান ঘোষণা দিয়েছেন- স্বাধীনতার ঘোষকের একজন সৈনিক, বিএনপির একজন নেতা-কর্মী বেঁচে থাকতে গণতন্ত্রকামী জনগণের আন্দোলন ব্যর্থ হতে পারে না। ৫২’র ভাষা আন্দোলন জনগণ ব্যর্থ হতে দেয়নি। ৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ জনগণ ব্যর্থ হতে দেয়নি। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনও জনগণ ব্যর্থ হতে দেবে না। দাবি আদায় করে তবেই জনগণ ঘরে ফিরবে। জনগণের বিজয় হবেই হবে। বিজয় সন্নিকটে, সুনিশ্চিত।

তারেক রহমান পুলিশ এবং জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের প্রতি আহবান করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতি জনপ্রশাসনের কর্মকর্তা—কর্মচারীদের সমর্থন থাকা স্বাভাবিক। তবে বিএনপি আশা করে, প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা-কর্মচারী হিসেবে সেই সমর্থন ব্যক্ত করার একমাত্র জায়গা হওয়া উচিত ভোটকেন্দ্র। সুতরাং রাষ্ট্র অর্পিত দায়িত্বের অপব্যবহার করে মানুষের ভোটের অধিকার হরণের সঙ্গে আপনি কোনোভাবেই নিজেকে জড়াবেন না।

তিনি আরও বলেন, জনগণের চলমান এই আন্দোলন প্রশাসনের বিরুদ্ধে নয়। আপনারা সতর্ক থাকবেন, জনগণের আন্দোলন সম্পর্কে সরকার নানারকম গুজব ছড়িয়ে আপনাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করবে। আপনারা মাফিয়া চক্রের ছড়ানো গুজবে কান দেবেন না। আপনাদের কারও ভয়ের কোনো কারণ নেই। আপনারা নিজেকে অবৈধ ক্ষমতার লালসা মেটানোর হাতিয়ারে পরিণত করবেন না। মনে রাখবেন, আপনাকে ব্যবহার করা শেষ হয়ে গেলে মাফিয়া চক্র আপনাকে ছুঁড়ে ফেলে দেবে।

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত ‍এ সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনসহ আরও অনেকে।