শেবাচিম হাসপাতাল কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল

ছবি : বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের এক কর্মচারীকে মারধরে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সহকর্মীরা।

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বরিশাল শের ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের এক কর্মচারীকে মারধরে প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সহকর্মীরা।

মঙ্গলবার দুপুুরে হাসপাতাল ক্যাম্পাসে এ মিছিল করেন তারা। এসময় শেবাচিম হাসপাতালের সরকারি কর্মচারী সমিতি (১৭-২০ গ্রেড) সভাপতি রুহুল আমিন লিখন ও ইউসুফ আলী মিলনসহ দুই সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিক্ষোভ মিছিলকারীরা জানান, দুইদিন আগে হাসপাতালের প্যাথলজির ভেতরে বহিরাগতরা ঢুকে রোগীর শরীর থেকে রক্ত টানার প্রতিবাদ জানায় অফিস সহায়ক মো. বায়েজিদ। ওইসময় বহিরাগতদের সাথে জোট বেধে আইএইচটির কতিপয় যুবক মিলে তাকে মারধরও করা হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি হাসপাতাল প্রশাসন পর্যন্ত পৌঁছালে তদন্ত কমিটি গঠন করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ওই ঘটনার সূত্র ধরে সোমবার বিকেলে নগরীর ব্যপ্টিষ্ট মিশন রোড এলাকায় বসে দূর্বৃত্তরা পুনরায় বায়েজিদের ওপর হামলা চালায়। তাকে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার বিচার ও হাসপাতাল কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়েছে। এদিকে মিছিলে শেষে বিক্ষোভকারী হাসপাতাল প্রশাসনের কাছে তাদের দাবির কথা তুলে ধরেন। তবে দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারীও দেন তারা।

এদিকে আহত বায়েজিদ বলেন, গত শনিবার বিকেলে হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের ভেতরে ইউনিফর্ম ছাড়া অপরিচিতো দুটি ছেলে রোগীর শরীর থেকে ব্লাড সংগ্রহ করছিলো। যা দেখতে পেয়ে তাদের পরিচয় জানতে চাইলে তারা নিজেদের ইমন ও ইয়ামিন নামে বেসরকারি একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাবরোটরি ও ম্যাটস্ এর শিক্ষার্থী বলে জানান। কিন্তু অনুমতি ছাড়া ভেতরে ঢোকার কারন জানতে চাইলে তারা আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। এ নিয়ে বাক-বিতান্ডা হলে রোগীর স্বজনরা তাদের ওপর চড়াও হয় এবং একজনকে মারধর করে।

এসময় হাসপাতালের এক নারী দালাল ওদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে আমাকে গালাগাল শুরু করে, এর প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে আমিও চড়াও হই। তবে ওইসময় বহিরাগত ইমন ও ইয়ামিনের সাথে কাওসারসহ বহিরাগত বেশ কয়েকজন যুবক আমাকে মারধর করে।

তিনি বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষনিক আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং হাসপাতাল থেকে চলে যাই। তবে এরইমধ্যে ইমনের ভাই বরিশাল আইএইচটির ছাত্র আবু ইউসুফ ইফতি তার সহযোগীদের নিয়ে আমাকে খুঁজতে হাসপাতালের প্যাথলজিতে আসে।

তিনি বলেন, পরে দিন রবিবার ইফতিসহ আইএইচটির কিছু শিক্ষার্থীরা পরিচালক স্যারের কাছে আসে। এরপর ঘটনার তদন্তে স্যার একটি তদন্ত কমিটিও করে দেন। কিন্ত পরদিন সোমবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু উদ্যান থেকে মেডিক্যাল ক্যাম্পাসে ঢোকার সময় সহকারী কাওসারসহ ব্যপ্টিষ্ট মিশন রোডের মুখে ইফতিসহ বেশ কয়েকজন যুবক আমার পথরোধ করে। সেখানে মারধর করে আমার সাথে টাকা পয়সা ও মোবাইল নিয়ে যায়।

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার সময় হাসপাতালের স্টাফ সাগর ও এক পুলিশ সদস্য আমাকে এবং আমার মোবাইল ফোন উদ্ধার করে দেয়। পরে মুমুুর্ষ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হলেও পরবর্তী হামলার শঙ্কায় রয়েছি। তিনি হামলার ঘটনার বিচার দাবি করে বলেন, প্যাথলজি বিভাগে সরকারি আইএইচটির যারা ইন্টার্নশিপ করছেন তাদের সাথে কোন বিরোধ হয়নি, অথচ বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টায় কিছু সর্ট ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

এদিকে এ বিষয়ে জানতে ইয়ামিনের মোবাইলফোনে কল করা হলে তিনি এ ঘটনার সাথে জড়িত নন বলে জানিয়েছেন। তবে হাসপাতাল প্রশাসন বলছে, গঠিত তদন্ত কমিটি সবকিছু খতিয়ে দেখবে এবং যারা দোষী সাব্যস্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে নিয়মানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।