নগরীর রুপাতলীতে থ্রি হুইলার চালকদের ওপর পরিবহন শ্রমিকদের হামলা-ভাংচুর


নিজস্ব প্রতিবেদকঃ বরিশালে রূপাতলী বাস টার্মিনাল ও সংলগ্ন থ্রি হুইলার স্ট্যান্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিএনপির এক গ্রুপের হামলায় অপর গ্রুপ ও থ্রি হুইলার চালকসহ ১২ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে এই ঘটনা ঘটে।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর রূপাতলী বাস টার্মিনাল দখলে নেয় মহানগর বিএনপির একটি গ্রুপ। এর আগে আওয়ামী লীগ আমলে চাঁদা দিয়ে এই টার্মিনাল থেকে চলতে হতো ও থ্রি-হুইলার বাস। সরকার পতনের পর কয়েকদিন থ্রি হুইলারে চাঁদা আদায় বন্ধ থাকলেও শুক্রবার নতুনভাবে তা শুরু করে বিএনপি নেতা কালাম চৌধুরী ও আব্দুর রাজ্জাকসহ তাদের লোকজন । থ্রি-হুইলার চালকরা চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে শুক্রবার রাতেই শতাধিক ব্যক্তি লাঠিসোটা নিয়ে তাদের উপর হামলা চালায়। এতে চালকসহ ১২ জন আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৭ জনকে বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এসময় ভাংচুর করা হয়েছে ১০টির মত যানবাহন।

থ্রি-হুইলার চালকরা জানিয়েছেন, আওয়ামী লীগের আমলে একটি সিন্ডিকেট থ্রি-হুইলার চালকদের কাছ থেকে ৫০ থেকে ৭০ টাকা আদায় করতো। এছাড়া প্রতিটি যাত্রীবাহী বাস থেকে ৮০ থেকে ১২০ টাকা চাঁদা নেওয়া হতো। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থ্রি-হুইলার চালকরা চাঁদা দেওয়া বন্ধ করে দেয়। কিন্তু বিএনপি নেতা কালাম চৌধুরী ও আব্দুর রাজ্জাকসহ তাদের বাহিনী টার্মিনালের প্রতিটি বাস থেকে প্রতিবার টার্মিনাল থেকে ছাড়তে ১০০-১২০ টাকা করে উত্তোলন শুরু করেন। শুধু বাসই নয় তারা থ্রি-হুইলার থেকে চাঁদা আদায় শুরু করে। থ্রি-হুইলার চালকরা স্থানীয় ২৫ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক রাজীব মোল্লার নেতৃত্বে চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানান।

রাজিব মোল্লা জানান,গত শুক্রবার রাতে রুপাতলী আলফা-সিএনজি স্ট্যান্ড থেকে চালকরা আসে একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ নিয়ে। আমি এর সমাধান দিতে আলফা-সিএনজি স্ট্যান্ডে যাওয়া মাত্র আলফা ভাংচুর করে বাস শ্রমিকরা। এমনকি চালকরা শান্তিপূর্নভাবে অবস্থান নিলে তাদের উপরেও হামলা করে গুরুতর আহত করা হয়। এসময় আমাদের সিএনজি চালক সাগর (৩০), কামাল (৩৭), কবির (৩৬), জাকির (৩৭) সহ দশজন আলফা-সিএজি চালক গুরুতর আহত হয়েছে। আমি বর্তমানে তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছি এবং এ চাঁদাবাজি থেকে রেহাই পেতে আইনের সাহায্য নিবো।

বর্তমান রুপাতলী বাস টার্মিনাল নিয়ন্ত্রন করেন বরিশাল মহানগর বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক জিয়া উদ্দিন সিকদার।

তিনি জানান, আমি আমার অফিস কক্ষে ছিলাম। আমাকে জানানো হয় যে, বাস শ্রমিকদের সাথে আলফা-সিএনজি স্ট্যান্ডে চালকদের সাথে হাতাহাতি হয়েছে। আমি আর্মি সদস্য মেহেদি এবং সমন্বয়ক সুজয় শুভকে নিয়ে তাদের সাথে বসেছি।আহতরা চিকিৎসা নিয়ে আসার পর আমি সবাইকে নিয়ে বসে এ সমস্যার সমাধান দিবো এবং অপরাধীকে জরিমানাসহ আইনানুগ শাস্তির ব্যবস্থা করবো। এসময় চাঁদা নেয়ার বিষয় জানতে চাইলে তিনি চাঁদা নেয়ার বিষয় সাংবাদিকদের ভুল তথ্য দিচ্ছে বলে জানান তিনি। বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আহতদের পক্ষ থেকে অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। এ বিষয়ে আইনানুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।