বরিশালটুডে ডেস্ক: পদ্মা সেতু চালুর পর দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগে এসেছে আমূল পরিবর্তন। গত এক বছরে এসব এলাকার যাত্রী পরিবহনে বেড়েছে বাসের সংখ্যা। ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচলও বেড়েছে কয়েক গুণ।
তবে পদ্মা সেতু থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক্সপ্রেসওয়ে থাকলেও পরবর্তী অংশের সড়ক রয়ে গেছে আগের মতোই। এর মধ্যে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক। ষাটের দশকে নির্মিত ২৪ ফুট প্রশস্ত বরিশাল থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত মহাসড়কটি এখন দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ সড়কে পরিণত হয়েছে।
গৌরনদী হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বরিশাল নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে মাদারীপুর সীমানার ভুরঘাটা পর্যন্ত মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে ৩২ কিলোমিটারেই ২৭টি ব্ল্যাক স্পট বা দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করেছে তারা। গত কয়েক মাসে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটায় এই স্পটগুলোকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থানগুলো হলো– ভুরঘাটা, ইল্লা, বার্থী, তারাকুপি, কটকস্থল, সাউদের খালপাড়, নীলখোলা, টরকি, গয়নাঘাট, পালরদী, গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড, আশোকাঠী, কাসেমাবাদ, বেজহার, মাহিলাড়া, বাটাজোর, বামরাইল, সানুহার, জয়শ্রী, ইচলাদী, সাকুরা ফিলিং স্টেশন, শিকারপুর-দোয়ারিকা টোল প্লাজা, মেজর এম এ জলিল সেতু, নতুনহাট, রহমতপুর ব্রিজ, রেইনট্রিতলা ও কাশীপুর ব্র্যাক অফিস মোড়।
বরিশাল নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল সূত্রে জানা গেছে, গত এক বছরে ঢাকা-বরিশাল রুটের পাশাপাশি কুয়াকাটা পর্যন্ত বাসের সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। শুধু বরিশাল থেকে বাসের সংখ্যাই ২০০ ছাড়িয়েছে। গ্রিনলাইন, এনা, সোহাগসহ বিভিন্ন কোম্পানির বাস কয়েক মিনিট পরপর চলাচল করছে। ঢাকায় যাতায়াতে ব্যক্তিগত যানের ব্যবহারও অনেক বেশি।
কিন্তু ফরিদপুরের ভাঙ্গা মোড় থেকে বরিশাল পর্যন্ত মহাসড়ক আগের সেই ২৪ ফুট প্রশস্তই রয়ে গেছে। এ কারণে অহরহ দুর্ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে গত ২৬ জুলাই বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কে গৌরনদীর আশোকাঠীতে দুই বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একটি বাস ছিটকে ডোবায় পড়ে। এতে বাসটিতে থাকা নারী-শিশুসহ অন্তত ১২ যাত্রী গুরুতর আহত হন। এরপর ৬ আগস্ট গৌরনদীর ইল্লা এলাকায় বাস ও ট্রলির সংঘর্ষে বাসযাত্রী আবদুর রহমান সোহাগ (২২) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। এ ছাড়া প্রতিনিয়তই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।
ঢাকা-বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে সাউদিয়া পরিবহনের সুপারভাইজার কামাল হোসেন বলেন, যানবাহন কয়েক গুণ বেড়ে যাওয়ায় অপ্রশস্ত মহাসড়ক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সড়ক প্রশস্ত করা এখন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। গৌরনদী হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি গোলাম রসুল বলেন, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে আগস্ট মাসেই চারটি বড় দুর্ঘটনা ঘটে। তারা এরই মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো চিহ্নিত করেছেন। স্পটগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, অতি ঝুঁকিপূর্ণ এবং সাধারণ ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে কিছু জায়গায় সতর্কতামূলক চিহ্ন বসানো হচ্ছে।
সূত্র-সমকাল