চাকরি ফিরে পেতে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে বরিশালের অপসো স্যালাইন (ওএসএল) ফার্মা লিমিটেডের স্টেরিপ্যাক বিভাগের প্রায় পাঁচশ শ্রমিক-কর্মচারী।
রবিবার (০২ নভেম্বর) সকাল ০৮টা থেকে নগরীর বগুড়া রোডে অপসো স্যালাইন কারখানা চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করেন শ্রমিকরা। এসময় অবিলম্বে চাকরিতে পুণর্বহালের দাবি জানান শ্রমিকরা।
এর আগে ২৯ অক্টোবর দুপুরে ডাকযোগে বরিশালের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ওএসএল ফার্মা অপসো স্যালাইন লিমিটেডের স্টেরিপ্যাক বিভাগের প্রায় পাঁচশ শ্রমিক-কর্মচারীকে একযোগে চাকরি অবসানের নোটিশ দেয় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
নোটিশ পাওয়ার দিন থেকেই কোম্পানিটির শ্রমিকরা চাকরি ফিরে পাওয়ার দাবি জানিয়ে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ করে আসছে।
এর ধারাবাহিকতায় শনিবারও সকালে ওএসএল ফার্মা লিমিটেডের স্টেরিপ্যাক বিভাগের নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা কোম্পানীর গেটের সামনে ও ভেতরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে।
আন্দোলনরত শ্রমিকরা বলেন, তিন দিনের ছুটি দিয়ে কোম্পানী থেকে আমাদের চাকরি অবসানের নোটিশ দেয়া হয়। চাকরি হারিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে আমাদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। ঘরে বাজার বন্ধ। সন্তানদের লেখেপড়াও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দোকান থেকে বাকিতে পণ্য দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। বাসা ভাড়ার জন্য ঘর মালিকরা চাপ দিচ্ছে। চাকরি ফিরে না পেলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।
শ্রমিকদের অভিযোগ, সম্প্রতি অপসো স্যালাইন ফার্মায় শ্রমিক ইউনিয়ন গঠন হয়েছে। সেখানে শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড জমা হয়েছে। ঠিক সেই মুহুর্তে একযোগে চাকরি থেকে প্রায় পাঁচশ শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের পর শ্রমিকদের আন্দোলনের মুখে অনেক শ্রমিকের চাকরি স্থায়ী করা হয়। ছাঁটাইয়ের তালিকায় তাদের নামও আছে। মূলত প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ যাচ্ছে দৈনিক মজুরিভিত্তিক শ্রমিক দিয়ে কাজ করাবে। আর যারা শ্রমিক ইনিয়ন করে করে তাদের ভয় তেখিয়ে চাপের মধ্যে রাখতেই এতো সংখ্যক শ্রমিককে একযোগে ছাঁটাইয়ের গণবিরোধী সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ চাকরিচ্যুত শ্রমিকদের।
তবে শ্রমিকদের দেয়া নোটিশে বলা হয়েছে, কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে ওএসএল ফার্মা লিমিটেডের বগুড়া রোড ফ্যাক্টরির স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টের উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে না। এমতাবস্থায়, বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ এর ২৬(৩) ধারার বিধান অনুযায়ী আগামী ১ নভেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ তারিখ হতে স্টেরিপ্যাক ডিপার্টমেন্টের সকল শ্রমিক-কর্মচরীদের চাকরি অবসান করা হলো। অবসানকৃত শ্রমিক- কর্মচারীদের চূড়ান্ত পাওনা আগামী ২০ নভেম্বরের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়া হবে।