গৌরনদী সংবাদদাতা : উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার নিয়ে বরিশালের গৌরনদীতে আওয়ামী লীগের দুইপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদ্য সাবেক পৌর মেয়র এবং চেয়ারম্যান প্রার্থী হারিছুর রহমান ও তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সঙ্গে এ সংর্ঘষ হয়। বৃহস্পতিবার (২ মে) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- হারিছুর রহমানের সমর্থক দেলোয়ার হোসেন দিলু, উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরীর সমর্থক ও মাহিলারা ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈকত গুহ পিকলু এবং তার মোটরসাইকেলের চালক পলাশ হাওলাদার।
স্থানীয়রা জানান, গৌরনদী উপজেলা নির্বাচনে পৌর মেয়র হারিছুর রহমান চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মিয়া রয়েছেন। তবে হারিছুর রহমান ছাড়া বাকি তিন প্রার্থী ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রচারণার কাজ শুরু করেন। যা নিয়ে উপজেলায় আওয়ামী লীগের দুইভাগে বিভক্ত হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, বাটাজোর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা আলতাফ হোসেন মারা গিয়েছেন। রাতে তার জানাজায় অংশ নিতে বাটাজোর বাসস্ট্যান্ডে আসেন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মিয়া এবং ইউপি চেয়ারম্যান পিকলু। পরে সেখানে প্রতিপক্ষ হারিছুর রহমানের সমর্থকরাও আসেন। তখন দুইপক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আহত ইউপি চেয়ারম্যান পিকলুর স্ত্রী বিপাশা গুহ বলেন, আহতদের স্থানীয়রা উদ্ধার করে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে নেওয়ার পর হারিছুর রহমানের ক্যাডাররা পিকুলকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাসপাতাল ঘেরাও করে। তখন প্রধান গেট আটকে তাকে রক্ষা করা হয়। হামলাকারীরা গেইট ভেঙে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। তারা হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্সসহ সব যানবাহন সরিয়ে দেয়। পরে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী ও পুলিশ সদস্যরা এসে আহতদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে পাঠায়।
আহত দেলোয়ার হোসেন দিলুর ভাই বাটাজোর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রব হাওলাদার বলেন, ‘আমি অসুস্থ। কী ঘটেছে জানি না। শুনেছি নির্বাচনি প্রচারে হামলা হয়েছে। এতে দিলু গুলিবিদ্ধ হয়েছে ও পিকলুকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে বলে শুনেছি।’
বিজ্ঞাপন
আহত দেলোয়ার হোসেন দিলুর দাবি, ইউপি চেয়ারম্যান পিকুল তাকে গুলি করে। পরে স্থানীয়রা এসে প্রতিরোধ করলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শাহাদাত হোসেন বলেন, তিনজন জখম অবস্থায় এসেছেন। তিনজনকে সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বাটাজোর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়েছে। এতে দুই পক্ষের তিনজন আহত হয়েছেন। তাদের বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। কোনো পক্ষের অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।