স্টাফ রিপোর্টার : বোরহানউদ্দিন পৌরসভার সাবেক সফল মেয়র, পৌর বিএনপির সভাপতি ও জনসেবায় আত্মনিবেদিত ব্যক্তিত্ব সাইদুর রহমান মিলন মিয়ার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। গত বছরের এই দিনে, ২০২৪ সালের ৪ জুলাই চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বরিশাল যাওয়ার পথে সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই নেতা।
বরিশাল পোস্ট এর প্রয়াত প্রধান উপদেষ্টা সাইদুর রহমান মিলন মিয়া ছিলেন একজন আলোকিত সমাজসেবক, যিনি শুধু রাজনৈতিক দায়িত্ব নয়, বরং প্রতিটি মানুষকে সেবা দেওয়াকে জীবনের ব্রত হিসেবে নিয়েছিলেন। ২০০২ সালে উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে বোরহানউদ্দিন পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০০৩ সালের সাধারণ নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে টানা নয় বছর পৌর মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তার নেতৃত্বে বোরহানউদ্দিন পৌরসভায় আধুনিকায়নের ছোঁয়া লাগে—নগর অবকাঠামো উন্নয়ন, সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অগ্রগতি—সবখানেই ছিল তার পরিকল্পনা ও নিষ্ঠার ছাপ। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি ছিলেন একজন সহজপ্রাপ্য, সজ্জন এবং কর্মযোগী নেতা।
জনশ্রুতি আছে, তার অফিস কিংবা বাসা কখনোই সাধারণ মানুষের জন্য বন্ধ থাকেনি। মিলন মিয়ার কাছে কেউ সমস্যার কথা বলতে গেলে নিরাশ হয়ে ফিরে এসেছে—এমন নজির খুবই বিরল।
২০১১ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বিএনপির সমর্থনে প্রার্থী হন কিন্তু ভোটকেন্দ্র দখল ও জালিয়াতির ঘটনার প্রতিবাদে তিনি সাহসিকতার সঙ্গে নির্বাচন বর্জন করেন। তার এই সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার রক্ষার এক বাস্তব উদাহরণ হয়ে আছে।
রাজনৈতিকভাবে তিনি ছিলেন বোরহানউদ্দিন বিএনপির সংগঠক ও শক্তিশালী নেতৃত্বের প্রতীক।বোরহানউদ্দিন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক থেকে শুরু করে পৌর বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তিনি ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আলহাজ্ব হাফিজ ইব্রাহিমের ঘনিষ্ঠ সহচর এবং বিশ্বস্ত কর্মী।
২০০৮ সালের পর থেকে রাজনৈতিক হয়রানি, মিথ্যা মামলা ও দমন-পীড়নের শিকার হলেও তিনি কখনো রাজনীতির মাঠ ছাড়েননি। অসুস্থ শরীরেও দলের ডাকে ছুটে গেছেন ভোলা, বরিশাল বা ঢাকার আন্দোলনে। রাজনীতির পাশাপাশি মানবিকতা, সহানুভূতি ও সেবার মানসিকতা ছিল তার পরিচয়ের মূল অংশ।
২০২৪ সালের ৪ জুলাই চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভোলা থেকে বরিশাল নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর পর শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো বোরহানউদ্দিনে। সহকর্মী, রাজনৈতিক সহযোদ্ধা, পরিবার ও সাধারণ মানুষ—সবাই আজও তাকে স্মরণ করে গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধায়। শহরের অলিগলি, অফিস, মাঠে আজো উচ্চারিত হয়, “মিলন ভাই থাকলে হয়তো এটা এমন হতো না।”
আজ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার রুহের মাগফিরাত কামনায় দলীয় ও পরিবারের পক্ষ থেকে দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে।