স্টাফ রিপোর্টারঃ ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ (ইউজিভি) চেয়ারম্যান ড.এম.ডি. ইমরান চৌধুরি বোর্ড অব ট্রাস্টি (বিওটি) নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠানে বলেন, স্কুল ও কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি এক নয়। ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের যে শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করবেন, সেটা স্কুল ও কলেজে পাননি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সময় নষ্ট না করে ল্যাবে সময় দিয়ে আগামী চার বছরের ভিত্তি তৈরি করবেন এবং হিরো হয়ে নিজের কর্মস্থানে প্রবেশ করবেন। গতকাল শনিবার সকাল ১০ টায় ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ (ইউজিভি) সভাকক্ষে উইন্টার-২০২৫ নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
ইমরান চৌধুরি বলেন, ইউনিভার্সিটি অব গ্লোবাল ভিলেজ-এর পক্ষ থেকে তোমাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তোমাদের জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। তোমরা ১২ বছর স্কুল ও কলেজ শেষ করে বর্তমান অবস্থানে এসেছো। স্কুল ও কলেজ এবং ইউনিভার্সিটি এক নয়। ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের যে শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন করবেন, সেটা স্কুল ও কলেজে পাননি। ওই স্কুল ও কলেজ লেভেলে বাবা-মা যতটুকু সম্ভব তাদের তদারকির মধ্যে সময় টা পার হয়েছে। নিজের কথা ও বাবা-মার কথা চিন্তা করে না। এমনকি আগামী চার বছরের জন্য সকলে প্রস্তুতি না নিয়ে ইউনিভার্সিটিতে আসে, যার ফলে শিক্ষার্থীরা সঠিক শিক্ষা নিয়ে ইউনিভার্সিটি থেকে আশানুরূপ সাফল্য লাভ করেনা। আপনাদের নিজেদের শিক্ষক ও ছাত্র দুটোই হতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষার্থীদের জন্য যুগোপযোগী সিলেবাস না থাকায় আমরা দক্ষ ও শিক্ষিত জনবল থেকে পিছিয়ে আছি। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশি সময় নষ্ট না করে লাইব্রেরিতে, ল্যাবে সময় দিয়ে আগামী চার বছরের ভিত্তি তৈরি করবেন এবং হিরো হয়ে নিজের কর্মস্থানে প্রবেশ করবেন। পড়ালেখার পাশাপাশি উপার্জন করবার জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিন। আমাদের ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীরা গুগলসহ বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানে নিজের দক্ষতার মাধ্যমে উপার্জন করে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছে। আপনারাও ইউনিভার্সিটি সকল সুযোগ দিচ্ছে তা নিজেদের দক্ষতা অর্জনে ব্যবহার করুন। নিজেদের দক্ষতা থাকলে এবং তা কাজে লাগালে প্রতিষ্ঠান আপনাকে খুঁজে নিবে।
উপাচার্য প্রফেসর আব্দুল বাকী’র সভাপতিত্বে উইন্টার-২০২৫ শিক্ষার্থীদের বরণ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন ডিন প্রকৌশল অনুষদ প্রফেসর ড. সৈয়দ আলী মোল্লা। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেন, তোমাদের সবাইকে ইউজিভি’র পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আজ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে তোমাদের জীবনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে, যেখানে তোমাদের এই পদচারণা শুধু মাত্র প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং নিজেকে একজন দক্ষ ও সৃজনশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার এক অনন্য সুযোগ তৈরি হবে, যা তোমাদের স্বপ্ন পূরণের পথে একটি শক্তিশালী ভিত্তি গড়ে তুলবে এবং ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তনে অনন্য ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তোমাদের সফলতার মধ্য দিয়েই এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব আরও বৃদ্ধি করবে। তোমাদের যাত্রা হোক আনন্দময়, জীবন হোক সাফল্যমণ্ডিত। তোমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য রইল আমার আন্তরিক শুভকামনা।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোশাধ্যক্ষ প্রফেসর ড. রাবেয়া বেগম বলেন, যারা নবীন তারাই আগামীর কর্ণধার। আমাদের আগামীর দেশ দক্ষ ও প্রতিষ্ঠিত হতে সুশিক্ষা প্রয়োজন। আমাদের দেশের শিক্ষা ক্ষেত্রে যুগোপযোগী সিলেবাস না থাকায় আমরা দক্ষ ও শিক্ষিত জনবল থেকে পিছিয়ে। আমাদের কাছে মনে হয়েছে আমাদের সুন্দর মানুষ তৈরি করা, সুন্দর মানসিকতা তৈরি করা, দক্ষ জনগোষ্ঠী ও শিক্ষিত জনবল তৈরি করা প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের সকলের ধারণা আমরা কীভাবে চকরি পাবো, ভালো একটা বেতন পাবো, কীভাবে আমরা সামান্য কিছু করে জীবন যাপন করতে পাবো। কিন্তু এ চিন্তাভাবনা থেকে বেরিয়ে আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা ইউজিভি’র সিজনশীল এবং যুগোপযোগী শিক্ষা দক্ষ ও শিক্ষিত হয়ে চাকরি না করে উদ্যোক্তা চাকরির বাজার তৈরি করবে এবং দেশের উন্নয়নে নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবে। বিশ্ববিদ্যালয় এমন একটি জায়গা, যেখানে সৃজনশীলতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতার মাধ্যমে তোমরা জীবনের পথে এগিয়ে যেতে পারবে। দেশের ক্ষেত্রে সামনে থাকবে অপার সম্ভাবনা। সঠিক দিকনির্দেশনার মাধ্যমে সব সময়ই তোমাদের পাশে থাকবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি উপাচার্য প্রফেসর আব্দুল বাকী বক্তব্যে বলেন, তোমরা মনে রেখো, শিক্ষা জীবনে চ্যালেঞ্জ আসবে, ব্যস্ততা থাকবে, কিন্তু সেই চ্যালেঞ্জগুলোকে গ্রহণ করতে হবে এবং প্রতিদিনই নতুন কিছু শেখার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। বাস্তবতা থাকবে, কিন্তু সেটা হোক নতুন কিছু শেখার প্রয়াস। চ্যালেঞ্জকে ভয় না পেয়ে, তা জয় করার মানসিকতা তৈরি করো এই বিশ্ববিদ্যালয় তোমাদের এমন একটি ক্ষেত্র তৈরি করে দিবে, যেখানে তুমি শুধু শিখবেই না, উপরন্তু উদ্ভাবনের মাধ্যমে দুনিয়াকে বদলে দেওয়ার ক্ষমতাও অর্জন করবে। অধ্যবসায়, সঠিক পরিকল্পনা এবং ইতিবাচক মানসিকতা তোমাকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নেবে। নতুন বছর, নতুন পরিবেশে সকল চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে সেই সাথে সফল হয়ে আগামী চারটি বছর আনন্দময় ও সুন্দর হোক, সকলের জীবন হোক সাফল্যমণ্ডিত। এসময় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও নবীন শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে নবীন শিক্ষার্থীদের ফুলের শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেয় ইউজিভির শিক্ষকরা