আগাম ধান ঘরে তুলতে ব্যস্ত প্রান্তিক চাষিরা


লালমনিরহাটে সংবাদদাতা: লালমনিরহাটে আগাম জাতের ধান শুস্ক মৌসুমে ঘরে তুলতে পেরে পাড়া মহল্লায় চাষিদের মাঝে খুশির আমেজ বয়ে যাচ্ছে। পাহাড়ি ঢল, ভারি বর্ষন ও দফায় দফায় বন্যা আর কালবৈশাখী ঝরসহ নানা প্রতিকুল পরিবেশ পেড়িয়ে লালমনিরহাটে সল্প মেয়াদী আগাম জাতের চাষ করা ধান ঘড়ে তুলতে পাড়ায় পাড়ায় মহা খুশি প্রান্তিক চাষি আর কৃষকেরা। ধানের ফলন ভালো আর কাংখিত বাজারদর পেয়ে অনেকটা ক্ষতি পুষিয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী এই অঞ্চলের কৃষকেরা।

চাল সহ সব ধরনের দ্রব্যমুল্য বৃদ্ধিতে যখন নীম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে ঠিক তখনেই কার্তিকের আগাম ধান কৃষকের মুখে মঙ্গা জয়ের স্বপ্ন দেখাচ্ছে।

এসময় কার্তিকের মঙ্গায় লালমনিরহাটের ঘরে ঘরে হানা দিত মঙ্গার ভয়াল থাবা। কিন্তু কালের বিবর্তনে সব কিছুই পাল্টে গেছে। এখন আর অগ্রায়ন মাসের অপেক্ষা নয় আগাম জাতের ধান চাষ করে এ অঞ্চলের কৃষক আশ্বিন মাসের মঙ্গা জয় করতে শিখেছেন। চলতি মাস জুড়ে লালমনিরহাটের বেশ কিছু এলাকায় আগাম জাতের আমন ধান কাটা ও মাড়াই শুরু হয়েছে।

কৃষকদের ধান কাটা ও মাড়াই এর কাজে সহযোগিতা করছেন কৃষক বধুরাও। কৃষকরা বলছেন আগাম আমন ধান চাষের কারনে মঙ্গা উধাও হয়ে গেছে। ধানের দাম ভাল থাকায় চাষিদের মনও বেশ উৎপুল্ল। অন্যদিকে মজুরি বেশি থাকায় কৃষি শ্রমিকদের মাঝে এক ধরনের চাঙ্গা ভাঙ্গাভাব লক্ষ করা গেছে। ধান কাটা ও মাড়াই এর কাজে কৃষি শ্রমিক পাওয়াটাই যেন দুঃস্কর হয়ে পড়েছে।দিন হাজিরা সকালের নাস্তা ও দুপুরের একবেলা খাওয়া সহ সাড়ে তিনশো থেকে চার শত টাকা দিয়েও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না এ অঞ্চলে।

বাংলাদেশ ধান গবেষনা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বি-৩৩ ও বাংলাদেশ আনুবিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত (বিনা-৭) আমনের আগে ফলন দিয়েছে। ব্রী-৩৩ ও বিনা -১৭ আমন ধানে খরচ খুব একটা বেশি নয়। বিঘা প্রতি উৎপাদন খরচ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা মিটিয়ে ১৬ থেকে ১৮ মন ধানের ফলন পাওয়া যায়।

এ অঞ্চলে সারাটা বছর কোন না কোন ধান আবাদ হচ্ছে।লালমনিরহাট জেলা সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় আগাম আমন ধান কাটা ও মাড়াই চলছে ধুমছে। কৃষকরা ধান ঘড়ে তুলতে ব্যাস্ত সময় পার করছেন।

কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান জানান, এ জেলায় আগাম আমন জাতের ধানের আবাদ ভাল হয়েছে। কৃষকেরা বর্তমান সময়ে তাদের মঙ্গা দুর করে তাদের প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটাতে সক্ষম হচ্ছেন। তিনি আরও জানান, চলতি আমন মৌসুমে ৫ উপজেলা মিলে মোট ৮৬ হাজার ৬৪০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ আর ২ লাখ ৬৪ হাজার ২৫২ মেঃ টন উৎপাদনের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারন করা হয়েছিল।