গ্রেনেড হামলার বিচার সরকারের সাজানো নাটক : ফখরুল

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল আলমগীর

বরিশালটুডে ডেস্ক: তারেক রহমানের নাম কোথাও উচ্চারিত হয়নি পুরো ইনভেস্টিগেশনে। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে বলানো হয়েছিল প্রায় ১৪৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার পরে। তিনি আবার সেটাকে অস্বীকার করে এফিডেভিট দিয়েছিলেন, সেটা গ্রহণ করা হয়নি।

সোমবার (২১ আগস্ট) দুপুরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এ মামলায় বিচার কার্যক্রম শেষই করে ফেলেছে। কী আর বাকি আছে। পুরো বিষয়টাই একেবারে, আমি বলব যে, একটা সাজানো নাটক।’

কেন সাজানো নাটক তার ব্যাখ্যা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘কারণ যেখানে মিটিং (২১ আগস্টের সমাবেশ) হওয়ার কথা ছিল সেখানে না হয়ে অন্য জায়গায় মিটিং শিফট করা হলো। কিন্তু সে বিষয়টি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশকে (ডিএমপি) ইনফর্ম করা হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘তারেক রহমানের নাম এফআইআর-এ ছিলই না, কখনোই ছিল না। তিনবার এফআইআর হয়েছে, তার মধ্যে একবারও তার নাম ছিল না। এরপর পুলিশের একজন ব্যক্তি যিনি আগে অবসরে গিয়েছিলেন, আব্দুল কাহার আকন্দ, যিনি আওয়ামী লীগের নমিনেশন চেয়েছিলেন, তাকে নিয়ে এসে পুনরায় চাকরি দিয়ে এ মামলার আইও করা হলো। সেই ভদ্রলোক তখন তারেক রহমানের নাম সেখানে দিলেন।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘তারেক রহমানের নাম কোথাও উচ্চারিত হয়নি পুরো ইনভেস্টিগেশনে। একমাত্র মুফতি হান্নানকে দিয়ে বলানো হয়েছিল প্রায় ১৪৫ দিন রিমান্ডে নেওয়ার পরে। তিনি আবার সেটাকে অস্বীকার করে এফিডেভিট দিয়েছিলেন, সেটা গ্রহণ করা হয়নি। তিনি (মুফতি হান্নান) যাতে কোর্টে গিয়ে কিছু বলতে না পারেন সেজন্য অন্য একটা মামলায় ফাঁসির হুকুম হয়েছিল, ইতোমধ্যে ফাঁসি কার্যকর করে তাকে আর কোর্টে আসার সুযোগই দেওয়া হলো না। তাহলে এটাকে আমরা কী বলব?’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটাই নয় শুধু, আমার কাছে রেকর্ড আছে। আমি সময় পেলে আপনাদের দেখাব যে এখানে ইচ্ছাকৃতভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তারেক রহমানের নাম (এই মামলায়) দেওয়া হয়েছে, বিএনপির নেতাদের নাম এখানে দেওয়া হয়েছে। কোনো সুষ্ঠু তদন্ত না করেই এ কাজটা করা হয়েছে।’

২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার ঘটনায় ২৪ জন নিহত হন এবং ৩০০ জনের বেশি আহত হন। এ মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় বিচারিক আদালত।

‘২১ আগস্টের ঘটনা কনডেমেবল ’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বার বার বলে এসেছি যে একটা নিরপেক্ষ-সুষ্ঠু তদন্ত হোক। সেই নিরপেক্ষ তদন্ত করা হয়নি। আমরা ২১ আগস্টের ঘটনাকে কনডেম (নিন্দা) করি। এটা অবশ্যই বাংলাদেশের রাজনীতিতে অন্যতম জঘন্য একটি ঘটনা এবং কনডেমেবল।’

‘কিন্তু একই সঙ্গে সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটা হচ্ছে যে এটা অযথা শুধু রাজনৈতিক কারণে নেতাদের নাম দিয়ে সেখানে ফায়দা লুটা হচ্ছে, এটা কেউ সমর্থন করতে পারছে না। আমরা আবারও বলছি, তারেক রহমান সাহেব, বিএনপির আবদুস সালাম পিন্টু বা লুৎফুজ্জামান বাবর তারা কেউ এটার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, রাজনৈতিক কারণে তাদের জড়িত করা হয়েছে।