বরিশালটুডে ডেস্ক: রিশালের বিভাগীয় রোডমার্চে যাওয়ার পথে গৌরনদী উপজেলায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা ১০ জনকে পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা বরিশালের বিভাগীয় রোডমার্চে যাওয়ার পথে গৌরনদী উপজেলায় আওয়ামী লীগের কর্মীরা ১০ জনকে পিটিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মী।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় রোডমার্চে যোগ দিতে যাওয়ার সময় গৌরনদী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের হামলায় বিএনপির ১০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার সকালে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ড, মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ড, গয়নাঘাট সেতু এলাকায় এসব ঘটনা ঘটে। এ সময় আওয়ামী লীগের কর্মীরা লাঠিসোঁটাসহ বিভিন্ন এলাকায় মোটরসাইকেলে করে মহড়া দেন।
বরিশাল উত্তর জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সাইয়েদুল আলম অভিযোগ করেন, রোডমার্চ কর্মসূচিতে যোগ দিতে আজ সকালে একটি মাইক্রোবাস নিয়ে ঢাকা থেকে তিনিসহ কয়েকজন বরিশালে আসেন। সকাল নয়টার দিকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৫-২০ জন তাঁদের মাইক্রোবাসের গতিরোধ করে তাতে তল্লাশি চালায়। এ সময় তিনিসহ সরকারি গৌরনদী কলেজছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি বিএনপি নেতা মো. আনোয়ার হোসেন (৪৮), গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. মহিম (৩৮) ও পৌর বিএনপির সদস্য মো. কামালকে (৪৫) পিটিয়ে আহত করে। তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান সাইয়েদুল আলম।
গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য মো. রাকিব সিকদার (২৮) অভিযোগ করেন, ‘রোডমার্চে যোগ দিতে আমি সকাল ৯টার দিকে মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছালে মাহিলাড়া যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. রাসেল রারির নেতৃত্বে ৫-৭ জন সন্ত্রাসী লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাকে মারধর করে। এ সময় আমাকে রক্ষায় এগিয়ে এলে ছাত্রদলের নলটিড়া ইউনিয়নের সদস্য জিসান (১৭) ও ফাহাদকে (২১) জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়।’ তাঁরা তিনজন বরিশালের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে চলে গেছেন বলে জানান রাকিব সিকদার।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে যুবলীগ নেতা রাসেল রারি বলেন, ‘হামলার ঘটনার সঙ্গে আমি জড়িত নই। বিএনপির অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালিয়েছে।’
এ ছাড়া একই দিন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গৌরনদী বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন গয়নাঘাট এলাকায় হামলার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন গৌরনদী পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির কর্মী স্বপন হাওলাদার (৩৭), শ্রমিক দল সদস্য মো. সাইয়েদ (৪৮) ও হুমকুম আলী (৪৫)। তাঁরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
বিএনপি নেতা-কর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম জয়নাল আবেদীনের মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল দিলে ও খুদে বার্তা পাঠালেও তিনি কোনো সাড়া দেননি। উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মো. আবু সাইদের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি সভাপতির সঙ্গে আলাপ করে বক্তব্য দেব।’ তবে পরবর্তী সময়ে তিনিও আর ফোন ধরেননি।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. ফরহাদ হোসেন মুন্সীর কাছে অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে ‘আমি ব্যস্ত আছি পরে কথা বলব’ বলে ফোন কেটে দেন তিনি।
গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আফজাল হোসেন বলেন, ‘হামলার কোনো ঘটনা আমার জানা নেই। লিখিত কোনো অভিযোগ পাইনি। পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’