স্টাফ রিপোর্টার: “আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘুরে বেড়ানো বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীর এমন বক্তব্য নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে । আর তাই নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. গোলাম ফারুকের রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. মাওলাদ হোসেন সানা।
বুধবার (১৫ মে) দুপুরে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর এ লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, মো. মাওলাদ হোসেন সানা ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করার লক্ষ্যে ভোটারদের মাঝে অবস্থান তৈরি করেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মো. গোলাম ফারুক। গত ৯ মে বানারীপাড়া উপজেলার সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের মহিষাপোতা এলাকার ফকির বাড়িতে এক কর্মী সভায় বক্তব্য দেয়াড় এক পর্যায়ে গোলাম ফারুক বলেন “আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই”।মুহূর্তেই এই বক্তব্যের ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। ফলে নষ্ট হচ্ছে নির্বাচনের পরিবেশ। পাশাপাশি ভোটাররা অনেকটা ভীত হয়ে পড়েছেন। অনেকেই আবার ভোট না দিতে যাবার কথা বলছেন।
লিখিত অভিযোগে মাওলাদ হোসেন সানা বলেন, এমন অবস্থায় আমরা নিজেরাও এই নির্বাচন নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছি। এমন বক্তব্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারের যে প্রতিশ্রুতি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে বলে মনে করি। পাশাপাশি নির্বাচনের আচরণ বিধি লঙ্ঘন করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মো. গোলাম ফারুক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে ও আচরণ বিধি মানছেন না। ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করছেন। পাশাপাশি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও প্রতিদ্বন্দ্বী পূর্ণ নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হবে বলে ধারণ করছি।
অভিযোগ দেয়াড় বিষয়টি নিশ্চিত করে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মাওলাদ হোসেন সানা বলেন, আমার চেয়ে বড় মাস্তান কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই, আমার চেয়ে বড় গুন্ডা কিন্তু বানারীপাড়ায় নাই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর এমন বক্তব্য দেয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারণ ভোটারদের মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে। ফলে তাদের ভোট দিতে আশা নিয়েই শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রশাসন আইনানুগ ব্যবস্থা নিলে এবং তা সাধারণ মানুষ জানতে পারলেই তারা আশ্বস্ত হবেন। যার মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষ ভোট দিতে আসতে পারেন।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার সুষ্ঠু ভোটের যে আশ্বাস দিয়েছেন তার প্রমাণ পাওয়া গেছে প্রথম ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আমিও আশাবাদী। এ বিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. গোলাম ফারুক দাবি করেছেন, তার গোটা বক্তব্য না দেখিয়ে বক্তব্যের খণ্ড চিত্র তুলে ধরা হয়েছে, সেইসাথে অভিযোগটিও সেইভাবে দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন অফিসার এম, এ, জি, মোস্তফা ফেরদৌস বলেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী মো.মাওলাদ হোসেন সানা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মো. গোলাম ফারুকের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন। বিষয়টি আমরা যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করে দেখবো। তারপর যা সত্য হবে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, গত ৮ মে বরিশালের দুটি উপজেলায় অত্যন্ত ভাল নির্বাচন হয়েছে। বানারীপাড়া, বাবুগঞ্জ ও উজিরপুরে চতুর্থ পর্যায়ে নির্বাচন হচ্ছে। সেখানে শতভাগ সুষ্ঠু ভোট হবে। ভোটাররা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যাতে ভোটকেন্দ্রে আসে সেই ব্যবস্থাই নেয়া হবে।