স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার অসিত বরণ দাশগুপ্ত-এর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা, স্বজনপ্রীতি ও নারী কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত গুরুতর অভিযোগে লিখিত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১ জুলাই) দৈনিক সময়ের বার্তার সাংবাদিক মুহম্মদ ইমন খন্দকার হৃদয় একযোগে এই অভিযোগপত্র দাখিল করেন- বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মো. ওয়ারেছ হোসেন, বরিশালের জেলা প্রশাসক ও শিল্পকলা একাডেমির সভাপতি মো. দেলোয়ার হোসেন এবং দুদকের বরিশাল আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. এইচ. এম. আক্তারুজ্জামান-এর বরাবর।
অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়, অসিত বরণ দাশগুপ্ত ২০১৩ সালে কালচারাল অফিসার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে সিলেট, হবিগঞ্জ ও বর্তমানে বরিশালে দায়িত্ব পালনকালে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
২০১৬ সালে সিলেটে নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলা হয় এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা স্মারকলিপি প্রদান করেন।
২০২৪ সালে সিলেটে তার অপসারণের দাবিতে বড় পরিসরে আন্দোলন হয়। পরে ২০২৫ সালে তাকে বরিশালে বদলি করা হয়। বরিশালে যোগদানের পর থেকেই তিনি সরকারি রেস্টহাউজে পরিবারসহ মাসের পর মাস অবৈধভাবে বসবাস করে প্রায় ৫ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন।
একইসাথে হলরুম ভাড়ার টাকা গোপন রেখে তা ব্যক্তিগতভাবে আত্মসাৎ এবং স্থানীয় ও সাধারণ ফান্ডের ২৯ লক্ষ টাকার একটি বড় অংশ নানা অজুহাতে তুলে আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তিনি জনসাধারণের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে পুরো প্রতিষ্ঠানটিকে নিজের একনায়কতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন। সংস্কৃতিকর্মীরা অভিযোগ করেছেন, তার সাথে রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত সম্পর্ক না থাকলে প্রতিষ্ঠান থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিযোগকারী মুহম্মদ ইমন খন্দকার হৃদয় বলেন, “বরিশাল একটি সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল। এই পবিত্র মাটিতে কোন দুর্নীতিবাজের ঠাঁই হতে পারে না। অসিত বরণ দাশগুপ্ত বরিশালের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে কলুষিত করছেন। তার কর্মকাণ্ড জুলাই- আগস্ট চেতনার পরিপন্থি। তার অপসারণ ও তদন্তের দাবি জানাই।”
অভিযোগের বিষয়ে শিল্পকলা একাডেমির ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ও বরিশালের জেলা প্রশাসক উভয়েই জানান, অভিযোগপত্র পাওয়ার পর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। দুদকও একইরকম তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে।
বিশ্বস্ত এক সূত্র নিশ্চিত করে জানিয়েছেন- অসিত বরণ দাশগুপ্ত যোগদানের পর থেকেই তিনি তার ধর্মের অনুসারি যারা বরিশালে যারা ক্ষমতার প্রভাব বিস্তার করতে পারে, এমন সরকারী- বেসরকারী চাকুরীজীবী, রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতাকর্মী এবং নানা পেশাজীবীদের সহ বিশেষ করে সংবাদকর্মীদের তার কার্যক্রমের অনুকূলে পজেটিভ সংবাদ প্রকাশ করার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে।