রবিউল ইসলাম রবি : বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ে ‘অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদের ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরিকল্পিতভাবে একমাত্র ‘প্রতিবন্ধী নারী’ চাকুরি প্রার্থী নাসরিন আক্তার শান্তা কে বাদ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলি অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগ্যতা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণের সদনপত্র সহ কম্পিউটার চালানোর অভিজ্ঞতা থাকার পরও বাংলা লেখা টাইপে দুর্বল বলে তাকে রহস্যজনকভাবে বাদ দেয়া হয় বলে জানান তিনি। তার অভিযোগ- ব্যবহারিক পরীক্ষার পরীক্ষক কর্তৃক তিনি ‘বৈষম্যের শিকার’ হয়েছেন।
এমন তথ্যের অনুকূলে বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মেডিকেল অফিসার ডা. মুন্সী মুবিনুল হক বলেন- বিষয়টি সম্পর্কে জানি। তবে এ সম্পর্কে ভালো বলতে পারবেন আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। কারণ- আমি জুনিয়র।
বরিশাল সিভিল সার্জন ও চলমান নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ডা. মনজুর-এ-এলাহী বলেন- স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষতার সাথে সকল কার্যক্রম চলমান রয়েছে। চাইলে সাংবাদিকরা যে কোনো বিষয়ের উপর পর্যবেক্ষণ করতে পারে। কারণ প্রতিটি কার্যক্রম খুবই স্বচ্ছতার সঙ্গে বিশেষজ্ঞ কর্তৃক নিরপেক্ষভাবে করা হচ্ছে। ব্যবহারিক পরীক্ষাও বিশেষজ্ঞরা নিয়েছেন। আবেদনকারী যেই হোক না কেন তার সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। আর এখানে কারো একতরফা কাজ করার সুযোগ নেই।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য কার্যালয়ের পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন- এই নিয়োগ বাস্তবায়নের জন্য মন্ত্রণায়ল থেকে কমিটি গঠন করে দেয়া হয়েছে। চলমান কার্যক্রমের মধ্যে কিছুই বলা যাবে না। তবে নিয়োগ কমিটি সঠিকভাবে সকল কার্যক্রম সম্পন্ন করতেছেন।
জানা গেছে, বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে ২০১৮ সালের ১১ ডিসেম্বর, এরপর পরবর্তীতে ২০২৫ সালের ৮ এপ্রিল জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ৭টি পদের অনুকূলে “পুনঃনিয়োগ বিজ্ঞপ্তি” দেয়া হয়। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির শর্তাবলি মেনে ‘অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক’ পদে আবেদন করেন নগরীর ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. নুর আহম্মেদ মৃধা এর মেয়ে ‘প্রতিবন্ধী ব্যক্তি’ নাসরিন আক্তার শান্তা।
এ পদের অনুকূলে গত ৩০/০৫/২০২৫ইং তারিখ বরিশাল বিএম কলেজে অনুষ্ঠিত লিখিত পরীক্ষায় তিনি সহ ১৫ জন উত্তীর্ণ হন। তার রোল নং ২৪২৯১৩০০৩৮৪। কিন্তু গত ১৯/০৬/২০২৫ইং তারিখ বরিশাল সিএন্ডবি রোড সংলগ্ন টিটিসিতে অনুষ্ঠিত ব্যবহারিক পরীক্ষায় তাকে রহস্যজনকভাবে বাদ দেয়া হয়। এমন অভিযোগ ‘প্রতিবন্ধী নারী’ নাসরিন আক্তার শান্তার। তিনি বলেন- যোগ্যতা থাকার পরও ব্যবহারিক পরীক্ষার পরীক্ষক কর্তৃক তিনি বৈষম্যের শিকার হয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০/০৫/২০২৫ইং তারিখ বরিশাল সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ‘স্বাস্থ্য সহকারী’ পদে চাকুরির নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ একাধিক পরীক্ষার্থী স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের কাছে নানা অভিযোগ তুলে ধরে ১ জুন লিখিত আবেদন করেন। লিখিত নিয়োগ পরীক্ষায় নিয়ম বহির্ভূত সুযোগ সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি নানা অনিয়ম তুলে ধরে একাধিক জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়।
মাত্র ১ দিনের মধ্যে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হওয়ায় এ নিয়োগ কে বরিশালের অনেকেই মুখে মুখে প্রচারণা করছে ‘পরিকল্পিতভাবে সাজানো এ নিয়োগ’। যাদেরকে নেয়া হবে তাদের আগে থেকেই সিলেক্ট করা হয়েছে। নামমাত্র চলছে নিয়োগ কমিটির কার্যক্রম । যে কারণে অনেক পরীক্ষার্থী পুনরায় লিখিত পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানিয়ে আসছে।