জনগনের চলাচলের সড়কে অবৈধভাবে নির্মিত গেট উচ্ছেদের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন


স্টাফ রিপোর্টার : বরিশাল নগরীর ২৪ নং ওয়ার্ড দক্ষিণ রুপাতলী ’মান্নান খান সড়ক’এর মাঝামাঝি স্থানে অবৈধভাবে রাস্তার মাঝে পিলার পুতে তার কাঁটার বেড়া দিয়ে বিনা প্লানে নির্মিত গেটের অপসারণ চেয়ে জনগনের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্থানীয় ক’বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেস ক্লাবে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই এলাকার আবদুল আল নাঈম রয়েল’র অবৈধভাবে নির্মিত গেট উচ্ছেদের দাবীতে প্রায় দু’শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা গণস্বাক্ষর দিয়েছে। জনগনের পক্ষ হয়ে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই এলাকার মো: হাবিব খানের পুত্র মো: শামীম খান।

তিনি বলেন, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় দু’হাজার মানুষসহ স্থানীয় ৫ শতাধিক ভোটার চলাচল করে। মান্নান খান জীবিত থাকা অবস্থায় তিনিও চেয়েছিলেন তার নামে সড়কটি থাকুক। শত বছরের পুরাতন ম্যাপে রয়েছে এ সড়কটি। দেশে ভোটার তালিকা শুরু হবার পর বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন এর ভোটের তালিকায়ও ’মান্নান খান সড়ক’ অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। ২০০৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারী মান্নান খান মারা যাবার পরই তার ছেলে আবদুল আল নাঈম রয়েল ওরফে কালোবাজারি রয়েল বেপরোয়া হয়ে উঠে। হঠাৎ চলমান বছরের শুরুতে রাতের আঁধারে তার পিতার নামের ওই ’মান্নান খান সড়ক’এর মাঝামাঝি স্থানে অবৈধভাবে রাস্তার মাঝে পিলার পুতে তার কাঁটার বেড়া দিয়ে একটি লোহার গেট নির্মাণ করেছে কালোবাজারি রয়েল। যে কারণে, পথচারীরাসহ এলাকার ৫ শতাধিক ভোটার ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পথ চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সরেজমিনে যে কেউ পরিদর্শন করলে উপরোক্ত তথ্য প্রমাণের মিল পাবে। এমন পরিস্থিতির মধ্যে এলাকার বাসিন্দারা গণস্বাক্ষর দিয়ে গেটটি অপসারণের জন্য বরিশাল সিটি করপোরেশন (বিসিসি) বরাবর লিখিত আবেদন করেছিল।

চলাচলের রাস্তার উপর বিনা প্লানে নির্মিত গেট অপসারণ প্রসঙ্গে- বিসিসি থেকে গত ২৫/১/২০২৪ তারিখে নোটিশে উল্লেখ থাকে, সার্ভেয়ারের প্রতিবেদনের আলোকে রাস্তার উপর সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা অবৈধ বলে প্রতিয়মান হয়। যা (স্থানীয় সরকার) সিটি কর্পোরেশন আইন ২০০৯ এর ৯২(৪) ধারা (৫ম তফসিল) ও ইমারত নির্মাণ আইন ১৯৫২ এর ৩ (খ) ধারা মোতাবেক অপরাধমূলক কাজ। এমতাবস্থায়, নোটিশ প্রাপ্তির সাথে সাথে চলাচলের রাস্তার উপর বিনা প্লানে নির্মিত গেট অপসারণ করে বিসিসি কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করার জন্য বলা হয়। ব্যর্থতায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

গত ১২/০২/২০২৪ ইং তারিখে স্মারক নং- বিসিসি/সম্পত্তি/২০২৪/২২৫ জানানো হয়, ইমরান হোসেন (রকি) গং এর আবেদনের প্রেক্ষিতে জে,এল ৫৬ নং রুপাতলী মৌজার হাল এস.এ ৪২৬৫ নং দাগ তথা বি.এস. ২০৪৯১ ও ২০৪৮২ নং দাগের রেকর্ডীয় চলাচলের রাস্তা সংক্রান্ত বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় উক্ত বিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ৩/০৩/২০২৪ ইং তারিখে শুনানীর দিন ধার্য্য করা হয়। পরে গত ৩/০৩/২০২৪ ইং তারিখে দু’পক্ষের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বিসিসি কর্তৃপক্ষ আগামী ১ মাসের মধ্যে গেট অপসারণসহ রাস্তায় পুতে রাখা পিলার ও তার কাঁটার বেড়া সরানোর নির্দেশ দেন। যেখানে ২৪নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় কালোবাজারি রয়েল ক্ষিপ্ত হয়ে বিনা প্লানে নির্মিত গেট অপসারণ না করে হাজী শেখ মো: সালাম ও তার ছেলে রকি, বায়জিদ এবং মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ আকনসহ আব্দুল হাবিব খান, শামিম খান, ছোহরাফ খান, সাদ্দাম খান, বাবু খান, হেলাল আকন ও কবির আকনসহ এলাকার আরো ক’জনের বিরুদ্ধে চলমান মাসের গত ২৪ মার্চ ‘ঢাকা শিশু কল্যাণ পরিষদ হল’ এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বাস্তব অর্থে বরিশালে যে প্রেক্ষাপট চলমান রয়েছে তার উল্টো তথ্য উপস্থাপন করে ওই সংবাদ সম্মেলন করেছে কালোবাজারি রয়েল। বর্তমানে গেট অপসারণের পক্ষে থাকা স্থানীয় লোকজনদের নামে নানা ভাবে মামলা দিচ্ছে কালোবাজারি রয়েল।

স্থানীয় জনগনের দাবী, বিনা প্লানে নির্মিত গেট অপসারণ করে শত বছরের পুরাতন সড়কটি থাকুক। মান্নান খান সড়ক নামেই থাকুক। কিন্ত সড়কটি বন্ধ হলে হাজার হাজার মানুষের সমস্যা হবে। জনগনের পথ চলাচলের স্বার্থে সড়কটি প্রয়োজন। এলাকাবাসীর পক্ষে উক্ত সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শেখ মো: সালাম, সোহরাবসহ ১০/১৫ জন।

আবদুল আল নাঈম রয়েল বলেন, তার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা। তার পিতার নামেই সড়ক করা হয়েছে। এবং জমিও তাদের। আর তার পিতার নাম স্বরণে নাম ফলকের জন্য গেট নির্মাণ করা হয়েছে। জনগনের পথ চলাচলে কোন অসুবিধা হয় না।